লবঙ্গ চায়ের উপকারিতা- লবঙ্গ চা বানানোর নিয়ম- Tips For Life

লবঙ্গ চা-  আমরা লবঙ্গ চায়ের কথা জানলেও এই চায়ের নানা গুণের কথা অনেকের কাছেই অজানা। কিন্তু এতোসব চায়ের ভিড়ে হঠাৎ করে লবঙ্গ চা কেন খেতে যাবেন। লবঙ্গে উপস্থিত ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন কে, ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম নানাভাবে শরীরের উপকার করে।গবেষকদের মতে, আপনার বয়স যদি ২৫ থেকে ৪০ এর মধ্যে হয়ে থাকে তাহলে ১০ টি কারণে  আপনিও ডেইলি খেতে পারেন এই বিশেষ চা-টি।   

তবে শুরুতেই জেনে নিন লবঙ্গ চা কিভাবে বানানো হয়। 

প্রথমে ৫/৭ টি বা পরিমাণ মতো লবঙ্গ গুঁড়ো করে নিতে হবে। তারপর সেই লবঙ্গের গুঁড়ো দেড় কাপ পানিতে মিশিয়ে কম করে হলেও ৫-১০ মিনিট ফোটাতে হবে। যখন দেখবেন পানি ফুটতে শুরু করেছে, তখন হাফ চামচ চা পাতা ফেলে দেবেন। আর কিছু সময় অপেক্ষা করে চা ছেঁকে নিলেই ব্যাস লবঙ্গ টি রেডি। এড করতে পারেন ১ চা চামচ মধু।

ভিউয়ারস এবার জেনে নিন লবঙ্গ চায়ের নানা গুণ

নাম্বার ওয়ান ১- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে- 

ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন লবঙ্গ চা পানের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ লবঙ্গের ভেতরে থাকা নাইজেরিসিন নামক উপাদান ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

নাম্বার ২- দাঁতের ব্যাথা কমাতে:

লবঙ্গতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু বিক্রিয়া করে যে নিমেষে দাঁতের যন্ত্রণা কমে যায়। এবার থেকে দাঁতে অস্বস্তি বা মাড়ি ফোলার মতো ঘটনা ঘটলে এক কাপ গরম গরম লবঙ্গ চা পান করলে উপকার পাবেন।

নাম্বার ৩- সাইনাসের সমস্যা কমায়: 

লবঙ্গে উপস্থিত ইগুয়েনাল নামে একটি উপাদান সাইনাসের কষ্ট কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।১ কাপ গরম লবঙ্গ চা পান করুন। দেখবেন, ধীরে ধীরে সাইনাস থেকে মুক্তি পাবেন।

নাম্বার ৪ - জ্বরের প্রকোপ কমায়: 

লবঙ্গে চায়ে থাকা ভিটামিন কে এবং ভিটামিন ই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে দেয় যে ভাইরাস খুব সহজে আক্রমণ করতে পারে না। ফলে ভাইরাল ফিভারের প্রকোপ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

নাম্বার ৫- শরীরে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গ চা পান করা  মাত্র শরীরের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে দেহের প্রতিটি কোনায় অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির কর্মক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে শরীরের সচলতাও বৃদ্ধি পায়।

নাম্বার ৬- আর্থ্রাইটিসের যন্ত্রণা কমায়:

লবঙ্গে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ এই ধরনের হাড়ের রোগের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে এক কাপ লবঙ্গ চা বানিয়ে ২/১ ঘন্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। তারপর সেই ঠান্ডা চা ব্যথা জায়গায় কমপক্ষে ২০ মিনিট লাগালে দেখবেন যন্ত্রণা কমে গেছে। জয়েন্ট পেন কমানোর পাশাপাশি পেশির ব্যথা এবং ফোলা ভাব কমাতেও এই ঘরোয়া ঔষুধিটি দারুন কার্যকরী।

নাম্বার ৭- ত্বকের সংক্রমণ সারাতে: 

ত্বকের যে কোনও ধরনের সংক্রমণ হলেই চোখ বুজে ক্ষতস্থানে লবঙ্গ চা লাগাতে ভুলবেন না। লবঙ্গে উপস্থিত ভোলাটাইল অয়েল শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। সেই সঙ্গে জীবাণু ধংস করে। ফলে সংক্রমণজনিত কষ্ট কমতে সময় লাগে না।

নাম্বার ৮- স্ট্রেস লেভেল নিমেষে কমে যায়:

গবেষকদের মতে, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই স্ট্রেসের শিকার, একারণে প্রতিদিন লবঙ্গ চা পান করলে অনেকটা উপকার পাবেন। কারণ এই পানীয়টির অন্দরে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র "ফিল গুড" হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্ট্রেস লেভেল কমতে একেবারে সময় লাগে না!

নাম্বার ৯ - হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: 

লাঞ্চ বা ডিনারের আগে লবঙ্গ দিয়ে বানানো ১ কাপ গরম গরম চা খেলে খাবার হজম হয় সহজেই  । তাই যাদের কম ঝাল-মশলা দেওয়া খাবার খেলেও বদ-হজম হয়, তারা লবঙ্গ চা একবার খেয়ে দেখতে পারেন।

নাম্বার ১০- ক্যান্সার রোগ দূরে থাকে

লবঙ্গে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ক্যান্সার এজেন্ট। নিয়মিত এক কাপ করে লবঙ্গ দিয়ে বানানো চা খেলে শরীরের ভেতরে অ্যান্টি-ক্যান্সার প্রপাটিজের পরিমাণ এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমে। শুধু তাই নয়, শরীরে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। 

নাম্বার ১১- ওজন কমাতে সাহায্য করে:

ওজন বেড়ে যাওয়া মানেই টেনশন। ওজন কমাতে চাইলে লবঙ্গ চা পান করেই দেখুন। প্রতিদিন নিয়ম করে সকালে ১ কাপ লবঙ্গ চা খান। দেখবেন মধ্যে আপনার ওজন কমে গেছে।

তাই আর অপেক্ষা নয়, আজই বানিয়ে ফেলুন এই হার্বাল টি। আর চেখে দেখুন কেমন লাগে!


Post a Comment

0 Comments